মঙ্গলবার, ০১ Jul ২০২৫, ০১:১৪ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

কিভাবে নিচ্ছে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা?

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

আগামী ১ এপ্রিল দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের) প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবারের ভর্তি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাস নাকি পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে হবে, এ নিয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা এখনো ধোঁয়াশায়। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ভর্তির প্রজ্ঞাপনে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানালেও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষার জোর দাবি জানাচ্ছেন।

এমনকি দাবি আদায়ে হাইকোর্টে এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনও দায়ের হয়েছে। রিট আবেদনটি এখন শুনানির অপেক্ষায়। যদিও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর এখনো পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসেই ভর্তি নেওয়ার পক্ষে অনড়। তবে আদালত থেকে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা এলে সে সিদ্ধান্ত মেনে পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে অনলাইনে আবেদনপত্র নেওয়া শুরু হয়। ৭ র্মাচ পর্যন্ত ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীর সংখ্যা ১ লাখ ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে। আগামী ১৫ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে।

মহামারি করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে গত বছরের এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায়। মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য ন্যূনতম জিপিএ-৮ নির্ধারণ করা হয়। এ কারণে এবার মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ইতিহাসে চলতি বছর সর্বোচ্চ রেকর্ড সংখ্যক পরীক্ষার্থী অংশ নেবে বলে ধারণা করছেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা। আপাতত ১ লাখ ৬১ হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নিতে পারে, এমন প্রস্তুতি রাখলেও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা আরও অতিরিক্ত ২০ থেকে ৩০ হাজার বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সংক্ষিপ্ত ও পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি:
চলতি বছরের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে কেন হবে না, এ নিয়ে সিদ্ধান্ত পেতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পক্ষে একজন অভিভাবক উচ্চ আদালতে রিট আবেদন দায়ের করেন। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, রিট আবেদনে বলা হয়েছে, করোনার কারণে শিক্ষার্থীরা এইচএসসিতে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা দিয়েছে। ফলে অন্যান্য বিষয়ে তারা পড়াশোনা করেনি। সুতরাং পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা নিলে এ বছর যেসব শিক্ষার্থী দ্বিতীয়বারের মতো ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন তারা পুরো বছরজুড়ে প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে পড়াশোনা করতে পেরেছেন। ফলে সম্প্রতি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভর্তিযুদ্ধের পরীক্ষায় পিছিয়ে যাবে।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকির বলেন, মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার জন্য দেশের বিশিষ্টজনদের সমন্বয়ে একটি ভর্তি পরীক্ষা কমিটি রয়েছে। পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত না কি পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে হবে, এ বিষয়ে কমিটিই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এখনো পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।

তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজে বিশেষ করে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীরা বেশি আগ্রহী থাকে। সরকারি মেডিকেলে আসন সংখ্যা চার হাজারের কিছু বেশি। প্রতিযোগিতামূলক এ পরীক্ষায় যেসব মেধাবী শিক্ষার্থী নিয়মিত পড়াশোনা করে তারাই মেধাতালিকায় উঠে আসে।

করোনার কারণে শিক্ষার্থীরা সব বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পায়নি, অন্যদিকে দ্বিতীয়বারের মতো যারা পরীক্ষা দিচ্ছেন তারা বেশি সময় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন- এ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আবু ইউসুফ ফকির বলেন, পূর্ববর্তী বছরের এইচএসসি পাস প্রার্থীদের ক্ষেত্রে মোট নম্বর থেকে ৫ নম্বর কেটে নেওয়া হয়। ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৫ নম্বর কেটে নেওয়া কম নয়।

তিনি বলেন, করোনার কারণে গত বছর এইচএসসি পরীক্ষাই অনুষ্ঠিত হয়নি। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবছর এবং আগামীতেও একই পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে। তবে আদালত থেকে ভিন্ন নির্দেশনা এলে সে অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর রাজধানীসহ সারাদেশের ১৯টি কেন্দ্রের ৫৫টি ভেন্যুতে এমবিবিএস প্রথম বর্ষের (২০২০-২১) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেন ১ লাখ ২২ হাজার ৮৭৪ জন। তবে পরীক্ষায় অংশ নেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৮৫৬ জন।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে সরকারি ও বেসরকারি মোট ১০৭টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এতে মোট আসন সংখ্যা ১০ হাজার ৬৯৭টি। এর মধ্যে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে আসন রয়েছে ৪ হাজার ৩৫০টি এবং বেসরকারি ৭০টি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা ৬ হাজার ৩৪৭টি।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর প্রকাশিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুসারে, গত বছরের মতো এবারও ১০০ নম্বরের ১০০টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। প্রতিটির প্রশ্নের মান ১। এমসিকিউ পরীক্ষা হবে ১ ঘণ্টায়। পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যায় ২০, রসায়নে ২৫, জীববিজ্ঞানে ৩০, ইংরেজিতে ১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান, বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ১০ নম্বর (মোট ১০০) থাকবে।

লিখিত পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য শূণ্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা যাবে। লিখিত পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেতে হবে। এর কম পেলে অকৃতকার্য বলে বিবেচিত হবেন। কেবল কৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের মেধাতালিকাসহ ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ মোট ২০০ নম্বর হিসেবে নির্ধারণ করে মূল্যায়ন করা হবে। লিখিত পরীক্ষার ভিত্তিতে মেধাতালিকা প্রণয়ন করা হবে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION